ওয়েব ডেস্ক; ১৭ অক্টোবর : উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন এবং যোগাযোগ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য এম সিন্ধিয়া উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের এক বছরের সাফল্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুকান্ত মজুমদার, যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ডঃ চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি-সহ মন্ত্রকের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সিন্ধিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শী নেতৃত্বে গত এক বছরে এই অঞ্চলে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। সংস্কার, জনসাধারণের কাছে পৌঁছানো এবং বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাপ্ত ফলাফলের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ উত্তর-পূর্বাঞ্চল নতুন আস্থায় ভরপুর। এই অঞ্চল প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতায় দেশের প্রথমসারিতে এগিয়ে এসেছে।

সিন্ধিয়া জানান, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের তুলনায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উৎপাদনের হার অনেক বেশি। এই অঞ্চলে সাক্ষরতার হারও অন্যান্য অঞ্চলের নিরিখে বেশি। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জনবিন্যাসের বৈচিত্র্য নতুন শক্তি সঞ্চার করে। এই অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের নেতৃত্বে পর্যটন, বিনিয়োগ, হস্তশিল্প, কৃষি, পরিকাঠামো, খেলাধুলা, অর্থনৈতিক করিডোর এবং আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। শিলং বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, কৈলাশহর বিমানবন্দরের উন্নয়ন সহ এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

সিন্ধিয়া জানান, ডিসেম্বরে দিল্লিতে অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসবে আটটি রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। আগরতলায় অনুষ্ঠিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ব্যাঙ্কার্স কনক্লেভে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ৫১-টি নতুন শাখা খোলা ছাড়াও এটিএম কাউন্টার খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যটন ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে আসামের মুগা সিল্ক, মেঘালয়ের লাকাডঙ হলুদ, মণিপুরের পোলো এবং ত্রিপুরার আনারস বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। কাজিরাঙা, জিরো, সোহরা, থেনজল, মাতাবাড়ি, কিষামা, নামচি এবং মৈরাং-এ পর্যটন শিল্পের প্রসারে সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গত ১১ বছরে এই অঞ্চলে নতুন নতুন বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে। এক সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যে মাত্র নটি এয়ারপোর্ট ছিল। সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশে কোনো বিমানবন্দর ছিল না। বর্তমানে ওই অঞ্চলে ১৭-টি বিমানবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে চারটি অরুণাচল প্রদেশে। ২০২৯ সালের মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্যে রেল যোগাযোগ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করতে ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিদেশীয় মহাসড়ক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে কৃষি, উদ্যানপালন এবং শিল্পায়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভোজ্য তেলের জন্য জাতীয় মিশনের আওতায় এই অঞ্চলে ৬৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বাঁশ শিল্পের প্রসারে ১২৬ কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। মোট ২ হাজার ৫৮৭ জন হস্ত শিল্পীকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে শিল্পোদ্যোগকে উৎসাহিত করতে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যও নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।