ওয়েব ডেস্ক; ৪ জুলাই : আকষ্মিক ও ব্যাখ্যাহীন মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন সংস্থা অনুসন্ধান চালিয়েছে। এইসব সমীক্ষা থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কোভিড-১৯ টিকা এবং আকষ্মিক মৃত্যুর মধ্যে কোনো যোগসূত্র নেই।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি)-এর করা সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে কোভিড-১৯ টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর, এর গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা বিরল। জিনসংক্রান্ত সমস্যা, জীবনযাপনের পদ্ধতি, আগে থেকে থাকা শারীরিক পরিস্থিতি, কোভিড পরবর্তী জটিলতা – যেকোনো কারণেই কোনো ব্যক্তি আকষ্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন।
আকষ্মিক ব্যাখ্যাহীন মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে আইসিএমআর ও এনসিডিসি একসঙ্গে কাজ করছে। বিশেষভাবে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সসীমার মানুষের আকষ্মিক মৃত্যুগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পৃথক গবেষণা দৃষ্টিভঙ্গী অবলম্বন করে দুটি পরিপূরক সমীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। প্রথম সমীক্ষাটি চালায় আইসিএমআর-এর ন্যাশনাল ইনন্সটিটিউট অফ এপিডেমোলজি (এনআইই)। ২০২৩ সালের মে থেকে অগাস্ট মাসের মধ্যে ১৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি হাসপাতালে এই সমীক্ষা চালানো হয়। ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাসের মধ্যে আপাতভাবে সুস্থ বলে মনে হওয়া যেসব ব্যক্তি হঠাৎ মারা গিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে এই সমীক্ষাটি করা হয়। এতে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ টিকা তরুণদের মধ্যে আকষ্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি কোনোভাবেই বাড়ায়নি।
দ্বিতীয় সমীক্ষাটি চালায় নতুন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস)। আইসিএমআর এতে সহযোগিতা করে এবং অর্থের যোগান দেয়। এই সমীক্ষায় তরুণদের মধ্যে আকষ্মিক মৃত্যুর সাধারণ কারণগুলি নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। লক্ষ করার বিষয় হল, এই সমীক্ষায় পূর্ববর্তী বছরগুলির মৃত্যুর তুলনায় এই সময়কালের মৃত্যুর কারণে কোনো বড় পরিবর্তন দেখা যায়নি। অধিকাংশ ব্যাখ্যাহীন মৃত্যুর ঘটনাতেই জেনেটিক মিউটেশনকে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমীক্ষা সম্পূর্ণ হলে এর চূড়ান্ত ফলাফল জানা যাবে।
প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে আকষ্মিক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে এই দুটি সমীক্ষা একযোগে চালানো হয়েছে। এর থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে, কোভিড-১৯ টিকা কোনোভাবেই মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়নি।
বিজ্ঞানীরা আবারও বলেছেন, কোভিড টিকার সঙ্গে আকষ্মিক মৃত্যুকে যুক্ত করে যেসব খবর প্রচারিত হচ্ছে, তা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের প্রচার, টিকার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার উপর আঘাত হানতে পারে। মনে রাখতে হবে, এই টিকা অতিমারীর সময়ে লক্ষ লক্ষ প্রাণ বাঁচিয়েছে। বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের ফলে মানুষজন যদি টিকা নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, সেক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের উপর বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে।