ওয়েব ডেস্ক; ২৫ এপ্রিল : আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনে’ প্রকাশিত একটি যুগান্তকারী গবেষণায়, কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের অধীন জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (জেডএসআই)- এর গবেষকরা দক্ষিণ এশীয় ট্রিশ্রু-গুলির জটিল শ্রেণীবিন্যাস সংক্রান্ত সম্পর্কের হালহকিকত উন্মোচন করেছেন।
ট্রিশ্রু- সত্যিকারের ট্রিশ্রু বা কাঠবিড়ালি নয়, এই স্তন্যপায়ী জীবগুলি স্ক্যান্ডেন্শিয়া নামের একটি স্বতন্ত্র শ্রেণীর অন্তর্গত। যদিও তাদের আকার-আকৃতি অনেকটা কাঠবিড়ালির মতো, জীবনধারাও অনেকটা কাঠবিড়ালিদের মতোই, ট্রিশ্রুগুলি তাদের দীর্ঘ নাক, ছোট ছোট গোঁফ, ভেজা নাকের প্যাড এবং পতঙ্গ বা ফল খেয়ে বেঁচে থাকার অভ্যাস সহজেই এদেরকে আলাদা করে চিনিয়ে দেয়।
প্রাইমেট হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ হলেও, তারা এখন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের একটি প্রাচীন বংশ হিসাবে স্বীকৃত।
জেডএসআইয়ের স্তন্যপায়ী ও অস্তিতত্ত বিভাগের প্রধান লেখক এবং বিজ্ঞানী ডঃ মনোকরণ কমলাকান্নান তথ্য সংগ্রহ থেকে চূড়ান্ত আকৃতি বিশ্লেষণ পর্যন্ত পুরো গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কয়েক দশক পুরানো যাদুঘরের নমুনাগুলি পরীক্ষা করে আমরা আলোকপাত করেছি যে, এই আকর্ষণীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলি কীভাবে একে অপরের থেকে আলাদা,”। “এই স্বচ্ছতা কেবল সঠিক প্রজাতি চিহ্নিতকরণের জন্যই নয়, কার্যকর সংরক্ষণ নীতি গঠনের জন্যও প্রয়োজনীয়। তিনি আরও বলেন, “যখন আধুনিক কৌশলগুলির সঙ্গে বিশ্লেষণ করা হয়, তখন যাদুঘরের নমুনাগুলি রূপান্তরের
ধাঁচ প্রকাশ করে, যা দীর্ঘস্থায়ী শ্রেণীবিন্যাসগত অস্পষ্টতা নির্মূল করতে যথেষ্ট সাহায্য করে”।
জেডএসআইয়ের স্তন্যপায়ী ও অস্টিওলজি বিভাগের প্রধান লেখক এবং বিজ্ঞানী ডঃ মনোকরণ কমলাকান্নান তথ্য সংগ্রহ থেকে চূড়ান্ত রূপচর্চা বিশ্লেষণ পর্যন্ত পুরো গবেষণার ধারণা ও নেতৃত্ব দিয়েছেন।তিনি বলেছিলেন, “কয়েক দশক পুরানো যাদুঘরের নমুনাগুলি পরীক্ষা করে আমরা আলোকপাত করেছি যে এই আকর্ষণীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলি কীভাবে একে অপরের থেকে আলাদা,”। “এই স্বচ্ছতা কেবল সঠিক প্রজাতি সনাক্তকরণের জন্যই নয়, কার্যকর সংরক্ষণ নীতি গঠনের জন্যও প্রয়োজনীয়। তিনি আরও বলেন, “যখন আধুনিক কৌশলগুলির সঙ্গে বিশ্লেষণ করা হয়, তখন যাদুঘরের নমুনাগুলি রূপান্তরের প্রকারভেদ উদ্ঘাটন করতে সাহায্য করে, যা আমাদের শ্রেণীবিন্যাসগত অস্পষ্টতা নির্মূল করতে সাহায্য করে।
সহ-লেখক এবং বিজ্ঞানী ডঃ মুকেশ ঠাকুর বলেন, “দক্ষিণ এশীয় ট্রিশ্রুগুলির বিস্তারিত শ্রেণীগত বিশ্লেষণকে সমর্থন করার জন্য উদ্ভব-সম্পর্কিত পাঠের প্রয়োজন রয়েছে। ভবিষ্যতের গবেষণার জন্য এটি অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
সহ-লেখক এবং বিজ্ঞানী ডঃ নিত্যানন্দম মারিমুথু আর-ও যোগ করে বলেন, “আমরা যে আকৃতিগত নিদর্শনগুলির রহস্য উন্মোচন করেছি তা এই প্রজাতিগুলিকে পৃথক করার কাজে পরিসংখ্যানগত সহায়তা দিতে সমর্থ।
আশ্চর্যজনকভাবে, এই গবেষণা নিকোবর ট্রিশ্রু সম্পর্কে দীর্ঘদিনের ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে। একসময় দক্ষিণ এশিয়ার ট্রিশ্রুগুলির মধ্যে সবচেয়ে ছোট বলে মনে করা হত এটিকে। এই বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বব্যাপী পরিচিত ২৩টি ট্রিশ্রু প্রজাতির মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম।
জেডএসআই-এর অধিকর্তা ডঃ ধৃতি ব্যানার্জি বলেন, “এই গবেষণাটি দক্ষিণ এশিয়ায় স্তন্যপায়ী প্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। সঠিক শ্রেণীবিন্যাস নিকোবর ট্রিশ্রুয়ের মতো বিচ্ছিন্ন এহেন গুলি রক্ষা করার প্রয়োজনে অপরিহার্য, বিশেষত ক্রমবর্ধমান পরিবেশগত চাপের মুখে।”
গবেষণায় এক শতাব্দিরও বেশি সংরক্ষিত নমুনা থেকে বিস্তৃত ডেটাসেট ব্যবহার করা হয়েছে, অত্যাধুনিক আকৃতিগত পদ্ধতি এবং পরিসংখ্যানগত মডেলিং-ও ব্যবহৃত হয়েছে। এই প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলি কেবল শ্রেণীবিন্যাস সংক্রান্ত অস্পষ্টতাগুলিই দূর করে না, এই পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং উপেক্ষিত স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলির সংরক্ষণের কৌশলগুলির-ও হদিশ দিতে সাহায্য করে।