ওয়েব ডেস্ক ; ২৪ আগস্ট : কেন্দ্রীয় আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রকের উদ্যোগে, দেশের ১৯৪টি জেলায় বিশেষভাবে সঙ্কটাপন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী (পিভিটিজি) প্রধান এলাকায় পিএম-জনমন অভিযান সংক্রান্ত জ্ঞাপন-শিক্ষণ এবং সংযোগ অভিযান (ইনফরমেশন এডুকেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন – আইইসি) এবং সুবিধাপ্রাপক সম্পৃক্তি শিবির কর্মসূচি চলছে ২৩ অগাস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত।
কেন্দ্রীয় আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী জুয়াল ওরাম এবং প্রতিমন্ত্রী দুর্গাদাস উইকে পিএম-জনমন প্রকল্পের আওতায় চলা প্রকল্পগুলির কাজকর্ম এবং থেকে শুরু হওয়া বিশেষ প্রচারাভিযানের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন। উল্লেখ্য, জনজাতি গৌরব দিবসে (১৫ নভেম্বর, ২০২৩) ঝাড়খণ্ডের কুন্তি জেলা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পিএম-জনমন অভিযানের সূচনা করেন।
গত বছর ১০০টি জেলায় এই ধরনের জ্ঞাপন-শিক্ষণ এবং সংযোগ অভিযানের আওতায় ছিল ১৮টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত আন্দামান ও নিকোবরের প্রায় ৫০০টি ব্লকের ১৫,০০০ বিশেষভাবে সঙ্কটাপন্ন আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। এবছর পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে – আওতায় থাকছেন ১৯৪টি জেলা ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০.৭ লক্ষ পিভিটিজি পরিবার এবং ৪৪.৬ লক্ষ মানুষ। ২৮,৭০০ পিভিটিজি প্রধান এলাকায় ১৬,৫০০ গ্রাম, ১৫,০০০ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ১০০০ তালুক জুড়ে এই অভিযান চলবে। যেসব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, গুজরাট, কর্ণাটক, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গনা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
পিএম-জনমনের আওতায় চলা প্রকল্পগুলির পরিষেবা প্রান্তিকতম এলাকায় বসবাসরত পিভিটিজি পরিবারগুলির কাছে যাতে ঠিকভাবে পৌঁছয় তা নিশ্চিত করা এই কর্মসূচির লক্ষ্য। মূলত, হাট-বাজার, সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র, গ্রাম পঞ্চায়েত, অঙ্গনওয়াড়ি, বহু উদ্দেশ্যসাধক কেন্দ্র, বন্ধন বিকাশ কেন্দ্র, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে এই উপলক্ষ্যে বিশেষ সচেতনা অভিযানের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে সামিল হবেন মাইভারত স্বেচ্ছাসেবক, নেহরু যুবকেন্দ্র, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, এনএসএস, এনসিসি, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও কৃষক উৎপাদক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এই কর্মসূচির আওতায় পিভিটিজি পরিবারগুলির হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে আধার কার্ড, জনজাতি শংসাপত্র, অরণ্য অধিকার আইনের আওতায় পাট্টা ইত্যাদি। জনধন অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথিও তুলে দেওয়া হবে তাদের হাতে। কারণ, বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে এইসব নথি অত্যন্ত জরুরি।
আদিবাসীদের ভাষায় পিএম-জনমন কার্ড বিতরণ করা হবে এই অভিযান চলাকালীন। আয়োজন করা হবে সুবিধাপ্রাপক সম্পৃক্তি শিবির এবং স্বাস্থ্য শিবিরের। জোর দেওয়া হবে সিকল সেল রোগ পরীক্ষায়। সচেতনতার প্রসারে স্থানীয় ও আদিবাসী ভাষায় তৈরি প্যামপ্লেট, ভিডিও ইত্যাদি ব্যবহার করা হবে। পিএম-জনমন সংক্রান্ত বার্তা নিয়ে তৈরি হবে দেওয়াল চিত্র। বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি, মাতৃত্বকালীন সুবিধা, কিষান ক্রেডিট কার্ড, কিষান সম্মান নিধি বাবদ অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে এদের কোনো অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে জরুরি ভিত্তিতে। প্রতিবন্ধকতা বিষয়ক শংসাপত্রও সহজে পেয়ে যাবেন এরা।
সমগ্র কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন রাজ্য ও জেলাস্তরের আধিকারিকরা। এছাড়াও আদিবাসী বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিকেও সামিল করা হবে এই কাজে।
পিএম-জনমন প্রকল্পের লক্ষ্য হলো সকলের পাকা বাড়ি, প্রতি পরিবারে নলবাহিত জল, গ্রামে গ্রামে পাকা রাস্তা, প্রতি পরিবারে বিদ্যুৎ, ছাত্রাবাস, কৌশল বিকাশ কেন্দ্র, ভ্রাম্যমান চিকিৎসা দল, পুষ্টি, উন্নত জীবিকার বিষয়গুলি নিশ্চিত করা। মূলত ৯টি ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে এই প্রকল্পে। এজন্য ২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ২৪,১০৪ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ ধরা হয়েছে।