ওয়েব ডেস্ক ; ৭ সেপ্টেম্বর : রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মু গত ৫ সেপ্টেম্বর নতুন দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেছেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষকদের কেবল শিক্ষিত নাগরিক গড়ে তোলাই নয়, তাঁদের অনুভূতিপ্রবণ, সৎ এবং উদ্যোমী করে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জীবনে এগিয়ে যাওয়াই সাফল্য, তবে জীবনের অর্থ নিহিত থাকে অপরের কল্যাণসাধনে। আমাদের ভালোবাসার মন এবং নৈতিক আচরণসম্পন্ন হতে হবে। অর্থপূর্ণ জীবনই সফল জীবন। শিক্ষকদের দায়িত্ব হল, ছাত্র ছাত্রীদের এইসব মূল্যবোধগুলি শেখানো।

রাষ্ট্রপতি বলেন, যেকোনও শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকরাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষকতা কেবল একটি পেশা নয়, মানব গঠনে এক পবিত্র লক্ষ্য। একজন শিশু ভালো ফল করতে না পারলে সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে বৃহৎ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, কখনও দেখা যায় শিক্ষক শিক্ষিকারা পরীক্ষায় সফল ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি বিশেষ নজর দেন। তবে, অসাধারণ শিক্ষাগত সাফল্য জীবনের সাফল্যের একটি দিক। কোন শিশু ভালো খেলোয়াড়ও হতে পারে। কোনও শিশুর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে, আবার কোনও শিশুকে দেখা যায় সামাজিক জনকল্যাণে উৎসাহভরে অংশ নিতে। প্রত্যেক শিশুর মধ্যে এই স্বাভাবিক মেধার দিকটি শিক্ষক শিক্ষিকাদের চিহ্নিত করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সমাজে মহিলাদের অবস্থা উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পিতা-মাতার দায়িত্ব হল, শিশুদের এমনভাবে শিক্ষিত করে তোলা যাতে তারা মেয়েদের সম্মান করতে শেখে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মেয়েদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কেবল কথায় বললেই হবে না, কাজে করে দেখাতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর মতে একজন শিক্ষক যদি ক্রমাগত জ্ঞানাহরণ না করেন তাহলে তিনি প্রকৃত অর্থে শিক্ষাদান করতে পারবেন না। সমস্ত শিক্ষক সম্প্রদায়েরই উচিত জ্ঞানার্জনের প্রক্রিয়াকে অক্ষুণ্ন রাখা। তা হলে শিক্ষাদান সবসময় প্রাসঙ্গিক ও উৎসাহবর্ধক হয়ে ওঠবে।

রাষ্ট্রপতি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলেন, তাঁদের ছাত্র-ছাত্রীদের এই প্রজন্ম উন্নত ভারত গড়ে তুলবে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিশ্ববীক্ষা এবং বিশ্বমানের দক্ষতা গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, মহৎ শিক্ষক শিক্ষিকারাই মহৎ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারেন। উন্নত মানসিকতা সম্পন্ন শিক্ষক সমাজই কেবল উন্নত রাষ্ট্রের নাগরিক গড়ে তুলতে সক্ষম। তিনি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপ্রেরণা জোগানোর মধ্যে দিয়েই আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভারতকে বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডার হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।