ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা; ২৯ অক্টোবর : কলকাতার এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার সম্প্রতি পেটের ভিতরে বর্ধিত টিউমারে আক্রান্ত ৪৫ বছর বয়সী একজন মহিলার দেহের টিউমার অপারেশন সফলভাবে করল। এই অপারেশনটি করেন ডাঃ এস কে বালার নেতৃত্বে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের একটি টিম।
২০২১ সালে কলকাতার ৪৫ বছর বয়সী মহিলা, নবনীতা ঘোষ-এর দেহে পরীক্ষা করে দেখা যায় যে তিনি একটি বড় পেটের টিউমারে আক্রান্ত। প্রাথমিকভাবে, একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর দুটি অপারেশন এবং অসংখ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল, কিন্তু টিউমারটি গুরুত্বপূর্ণ রক্তবাহের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ওই অবস্থায় টিউমারটির অপারেশন করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তিনি মুম্বাইয়ের একাধিক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে তাঁর এই অবস্থার প্রতিকার সম্পর্কে পরামর্শ চেয়েছিলেন, কিন্তু কেউই তাঁকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারেননি। জীবনের সব আশাই বৃথা হতে বসেছিল। পরে তাঁকে ডাঃ জয়দীপ বিশ্বাসের কাছে রেফার করা হয়। তিনি তাঁকে আশার আলো দেখাতে পেরেছিলেন। তাঁর পিইটি সিটি স্ক্যান বিশ্লেষণ করার পর দেখা যায় যে টিউমারটি আশংকাজনকভাবে ২০ সেন্টিমিটার আকারে ধারণ করেছে। ওই অবস্থায় অপারেশনের সুপারিশ করা হয়। টিউমারের আকার পরীক্ষা করার পরে এবং রোগীর স্বাস্থ্যের গুরুতর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার পরে, ডাঃ জয়দীপ বিশ্বাস রোগীকে ডাঃ এস কে বালা
র সঙ্গে পরামর্শ করতে বলেন। এরপর কলকাতার এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার-এ সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট ডাঃ এস. কে. বালা`র নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি টিম আট ঘন্টার অপারেশনে টিউমারটিকে অপসারণ করেন। এই সফল অপারেশনের পর মিসেস ঘোষের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। তাঁর জীবনকে নতুন করে শুরু করার সুযোগ করে দিয়েছে।
পেটের ভিতরে বেড়ে ওঠা টিউমার, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে, গাইনোকোলজিকাল সমস্যাগুলির সঙ্গে তাদের সংযোগের কারণে একটি গুরুতর চিকিৎসা সমস্যা তৈরি করে।
কলকাতার এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার-এর সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট ডাঃ এস কে বালা এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানাতে গিয়ে বলেন, “পেটের ভিতরে বেড়ে ওঠা টিউমার অপারেশন করা একটি জটিল কাজ, বিশেষ করে যখন এতে জীবন-সংশয়ের ঝুঁকি থাকে। এই ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতিকে মূল্যায়ন করা এবং সময়মত পিইটি সিটি স্ক্যান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা আমাদের উন্নত ডায়াগনস্টিক টেকনোলজি`র সহায়তায় সফলভাবে অপারেশনটি করেছি। আমরা নবনীতার পেট থেকে টিউমারটি সফলভাবে অপসারণ করতে পেরে আনন্দিত। তিনি এখন দ্রুত সুস্থতার পথে রয়েছেন।”
শ্রীমতি নবনীতা ঘোষ চিকিৎসকদের প্রতি তাঁর আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি আমার পেটের ভিতরে বেড়ে ওঠা টিউমারটির অপসারণের জন্য তৃতীয় বারের জন্য অপারেশন করাতে কলকাতার এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টারে গিয়েছিলাম। সেখানে সফলভাবে এই অপারেশন হওয়ায় আমি তাদের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ৷ আমার এই কঠিন সময়ে এই সেন্টারের মেডিকেল টিমের ব্যতিক্রমী পরিষেবা এবং সার্বিক সহযোগিতা আমার মনোবলকে বাড়িয়ে তুলেছে। আমি আন্তরিকভাবে তাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি, কারণ তারা চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা ও বিশ্বাসকে পুনরুজ্জীবিত করেছে এবং আমাকে নতুনভাবে জীবন শুরু করার সুযোগ করে দিয়েছে।”