ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা, ২০ নভেম্বর: মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল, পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় হসপিটাল চেন, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নিজেদের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে কলকাতায় তাদের ফ্ল্যাগশিপ ফেসিলিটিতে একটি জটিল রি ইমপ্ল্যান্টেশন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে । এই পুরো কর্মকাণ্ড দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করেন স্বনামধন্য প্লাস্টিক সার্জন ডঃ অখিলেশ কুমার আগরওয়াল, কনসালটেন্ট, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল।
সাহিল কুমার পাল, ২৩ বছর বয়সী যুবক, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার নরেন্দ্রপুরে তার বাড়ি, একটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন যখন তার বাড়ির অ্যাপার্টমেন্টের লিফটে তার আঙ্গুল কেটে আলাদা হয়ে যায়। দেরি না করে সাহিলের পরিবার যোগাযোগ করে মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটালের সাথে। হসপিটালের সাথে প্রারম্ভিক কথা বলে পরিবার ওই কেটে যাওয়া আঙ্গুল সংরক্ষণ করে এবং ৩০শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১ টা নাগাদ হসপিটালের ইমারজেন্সি বিভাগে সাহিল এবং কেটে যাওয়া আঙ্গুল নিয়ে উপস্থিত হয় পরিবার। ডঃ অখিলেশ কুমার আগরওয়াল পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন এবং একই দিনে রাত ১২: ৩০টা নাগাদ জটিল অস্ত্রোপচার শুরু হয়। ওই কেটে বাদ যাওয়া আঙ্গুল রি ইমপ্ল্যান্ট করতে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়।
খুব যত্নের সাথে কেটে যাওয়া আঙ্গুলটি রিইমপ্ল্যান্ট করা হয়, যেখানে আঙ্গুলের পুরো কাঠামো একদম আগের মত হয়ে যায়। কে ওয়্যার ব্যবহার হয়েছে হাড় ঠিক করার ক্ষেত্রে। তবে এই ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল পুনরায় রক্ত সঞ্চালন শুরু করা রক্তনালির মাধ্যমে, যার আনুমানিক মাপ ১ মিলিমিটারের চেয়েও কম।

সাহিল কুমার পাল, বর্তমানে একটি বিপিওতে কর্মরত, তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে জানান,” ৩০শে অক্টোবর সন্ধেবেলায়, আমি যখন অফিস থেকে ফিরছিলাম, ঘটনাটি ঘটে আমাদের অ্যাপার্টমেন্টের লিফটে। তখন ঘড়িতে বাজছিল আটটা বেজে পঁয়তাল্লিশ। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে আমি মেডিকাতে পৌঁছই আর আমার সাথে ছিল কেটে যাওয়া আঙ্গুল। মধ্যরাতে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। আমাকে ৫ই নভেম্বর ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রথম সাপ্তাহিক রিভিউ আমার ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে ডঃ আগরওয়ালের কাছে। আশা করছি পরের সপ্তাহে আমার প্লাস্টার খুলে ফেলা হবে। আমি আশা রাখছি আট সপ্তাহের মধ্যে আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারব। আমি ভীষণ ভাবে কৃতজ্ঞ ডঃ আগরওয়াল এবং মেডিকা টিমের কাছে যেভাবে তারা দ্রুত রেসপন্স করেছেন এবং সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে।

ডঃ অখিলেশ কুমার আগরওয়াল ফলাফলে স্বস্তি প্রকাশ করে জানিয়েছেন,” এই অস্ত্রোপচারের সাফল্য দেখিয়েছে যে দরকারে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারলে কি সুবিধা হয়। আমরা সাহিলের ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক ফলাফল দেখতে পারছি, তাতে আমরা খুব তৃপ্ত। আমি আরো একবার মনে করিয়ে দিতে চাই সাধারণ মানুষের সচেতনতার জন্য যে অ্যাক্সিডেন্টের ক্ষেত্রে কোন দ্বিধা দ্বন্দ্ব না রেখে চোট প্রাপ্ত মানুষকে যে কোন স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রতে নিয়ে আসা কতটা দরকার। শুরুতে আমরা যেই দিকটায় জোর দিই সেটা হল শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ যা দুর্ঘটনায় আলাদা হয়ে গিয়েছে, সেটা আলাদা করে রাখি। এরপর জল দিয়ে পরিষ্কার করার পর একটি ওয়াটার রেজিস্টেন্ট ব্যাগে বরফের সাথে রাখা হয়। এরপর আক্রান্তের যেখান থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে, সেখানে একটি প্রেসার ব্যান্ডেজ লাগানো হয় যাতে হেমারেজের পরিস্থিতি এড়ানো যায়। তবে বলাই বাহুল্য, আক্রান্তকে দ্রুত হসপিটালে পৌঁছনো এবং চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্রে জলদি চিকিৎসা শুরু হওয়া একান্ত আবশ্যক।”

অয়নাভ দেবগুপ্ত, জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মেডিকা গ্রুপ, জানান,” আমরা যেভাবে ২৩ বছর বয়সী পেশাদারের অঙ্গ বাঁচাতে পেরেছি, তা সত্যি বাহবা দেওয়ার মতো। একদম প্রয়োজনমত সময়ের মধ্যে ডঃ আগরওয়াল এবং টিমের জন্য সাহিলের ক্ষেত্রে এই জটিল রিইমপ্ল্যান্টেশন সম্ভব হয়েছে।