শুভাবরি ওয়েবডেস্ক, ২৭ জুন, দেবাঞ্জন দাস, কলকাতা:
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিনের শেষ প্রান্ত, পেশা কারোর মাছ ধরা, কারোর আবার জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করা। কিন্তু জীবিকার জন্য তারা নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না। জঙ্গল থেকে জীবিত কেউ ফিরে আসেন, আবার কেউ ফেরেন না । কারোর দেহ আসে রক্তাক্ত অবস্থায়, আবার কারোর দেহও পাওয়া যায় না।
এই সুন্দরবন অঞ্চলের বাঘ এবং কুমিরের দ্বারা নিহত মানুষদের স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদের অধিকার প্রসঙ্গে আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে “বিশ্ব বিধবা দিবস” উপলক্ষে যৌথভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই বিধবাদের জীবনের মুল স্রোতে ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা করছেন অর্থাৎ দিশা , অ্যাকশন এইড অ্যাসোসিয়েশন এবং দক্ষিনবঙ্গ মৎসজীবী ফোরাম।
দক্ষিনবঙ্গ মৎসজীবী ফোরামের মিলন দাস বলেন, যদি কোনো মানুষ সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘ বা কুমিরের হাতে মারা যান, সেক্ষেত্রে তাদের স্ত্রীদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সুন্দরবনের ভৌগলিক মানচিত্র অনুযায়ী যেখানে ‘কোর অঞ্চল’ অর্থাৎ সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ, সেখানে বাকী অঞ্চলগুলি থেকে বেশী মাছ পাওয়া যায়। ফলে জেলেরা সেখানে গিয়ে বিপদের মুখে পরে। তার দাবী অঞ্চল বণ্টনের সময় রাজ্যসরকার ঠিক ভাবে সার্ভে করে নেননি। অতএব, সেইখানে কোনো মানুষের মৃত্যু হলে ক্ষতিপুরণ পেতে তার পরিবারের নাভিশ্বাস উঠে যায় ।
অন্যদিকে দিশার পক্ষ থেকে শশাঙ্ক দেব বলেন, সরকারের যে ১০০ দিনের কাজের ব্যবস্থা করেছে সেটাও তারা ঠিক ঠাক পাচ্ছে না।
এছাড়া বনদপ্তরের তরফ থেকে তাদের সাহায্য করা হচ্ছে না বলে তারা দাবী করেন।
তারা কয়েকটি দাবী আজ সরকারের কাছে রাখেন:
বাঘ বা কুমিরের দ্বারা কোনো মৎসজীবী আক্রান্ত হলে তার পরিবারকে দশ হাজার টাকা খয়রাতি দিতে হবে।
নিহতদের ক্ষেত্রে নূন্যতম পাঁচ লক্ষ এবং আহতদের ক্ষেত্রে তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে।
কোনো রকম হেনস্থা ছাড়া পুলিশ রিপোর্ট, ডেথ সার্টিফিকেট ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা।
আহত মৎসজীবীদের চিকিৎসার খরচ বহন করা।
নিহত মৎসজীবীদের স্ত্রীদের মাসিক নূন্যতম তিন হাজার টাকা ভাতা ।
তাদের স্থায়ী পুনর্বাসন মতো দাবী তারা তোলেন।
আজ সুন্দরবনে মৃত মৎসজীবীদের পরিবারকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নাগরিক মঞ্চ থেকে নব দত্ত, অ্যাকশন এড অ্যাসোসিয়েশন এর অশোক নায়েক ।