ওয়েব ডেস্ক ; ৩১ আগস্ট : কিডনির অসুখের পোশাকী নাম নেফ্রাইটিস বা নেফ্রোটিক সিনড্রোম। বাচ্চাদেরও এই অসুখ হয়।
ছোটদের কিডনির অসুখ হলে যথযথ চিকিৎসা, লাইফস্টাইল মডিফিকেডশন ও সঠিক ডায়েটের পাশাপাশি নিয়মিত চেক আপ করিয়ে নেওয়াও জরুরী। জানালেন উডল্যান্ডস মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা শান্তনু রায়।
ছোটদের কিডনি খারাপ হলে প্রথম দিকে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। খেলতে গেলে হাঁপিয়ে পড়ে, ক্ষিধে কমে যায়। হাত পা ফুলে যায়, চোখ মুখে ফোলা ভাব দেখা যায়। ইউরিন টেস্ট সহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা করে নেফ্রোটিক সিনড্রোম সনাক্ত করা যায়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে এই ধরণের রোগকে ইডিওপ্যাথিক বলে, অর্থাৎ এসব রোগের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না। তবে বেশ কয়েকটি কারণে নেফ্রোটিক সিনড্রোমের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যেমন কোনও সংক্রমণ, টিউমার, অ্যালার্জি এবং আইব্রুফেন জাতীয় ওষুধের ব্যবহার করলে কিডনির এই সমস্যা দেখা যায়। এছাড়া বাচ্চার ক্যানসার , ডায়বিটিস এবং অতিরিক্ত মোটা চেহারাও অনেক সময় নেফ্রোসিসের কারণ হতে পারে। ১.৫ বছর থেকে ৫ বছরের শিশুদের মধ্যে এই অসুখের ঝুঁকি বেশি। অবশ্য যে কোনও বয়সেই এই অসুখ হতে পারে।
বেশ কিছু শারীরিক গোলযোগকে নেফ্রোটিক সিনড্রোম বা নেফ্রোসিস বলা হয়। এই অসুখে কিডনিতে থাকা গ্লোমেরুলাসের কার্যক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে কিডনিতে প্রোটিন জমে যায়। উপসর্গ হিসেবে বাচ্চা অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে, চোখ, পেট, গোড়ালি , পায়ের পাতা ফুলে যায়, খিদে কমে যায় , বাচ্চাকে ফ্যাকাসে দেখায়। চিকিৎসক নেফ্রোটিক সিনড্রোম সন্দেহ করলে ইউরিন টেস্ট, ব্লাড টেস্ট এবং প্রয়োজনে কিডনির বায়োপ্সি করাতে বলেন।
সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে এই অসুখটি সারিয়ে তোলা যায়। চিকিৎসার অঙ্গ হিসেবে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হয় এবং কমে যাওয়া প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ানো হয়। বিশেষ ওষুধের পাশাপাশি কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। তবে নিয়মিত চেক আপ করা দরকার, কারণ অসুখটা যে কোনও সময় ফিরে আসতে পারে।
এছাড়া বাচ্চাদের আর একটি কিডনির সমস্যার নাম নেফ্রাইটিস। আসলে কিডনিতে আছে অজস্র নেফ্রন, কোনও কারণে নেফ্রনের প্রদাহ হলে অর্থাৎ ফুলে উঠলে তাকেই বলে নেফ্রাইটিস। গলা ব্যথা বা সর্দি কাশির পর সাধারণত নেফ্রাইটিসে ঝুঁকি বাড়ে। যদি গলা ব্যথা, ইউরিন ইনফেকশন বা এই ধরণের সংক্রমণের পর প্রস্রাবের সমস্যা দেখা গেলে কিডনির সমস্যার কথা ভাবতে হবে। যে সব উপসর্গ দেখলে নেফ্রাইটিসের কথা ভাবতে হবে সেগুলি হল কালচে বা লালচে রঙের প্রস্রাব, প্রস্রাবের পরিমাণ খুব কমে যাওয়া, এনার্জির অভাব, অল্পে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, মাথার যন্ত্রণা, হাই ব্লাড প্রেশার, ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়ার মত উপসর্গ দেখলে বাচ্চাকে ডাক্তার দেখান উচিৎ। প্রস্রাব ও রক্ত পরীক্ষা, ইউএসজি, ইসিজি করে অসুখ নির্ণয় করা হয়। সঠিক চিকিৎসায় রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ওষুধের পাশাপাশি ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ডায়েটও মেনে জরুরি।