ঘূর্ণিঝড় তউকতের প্রভাব পড়েছিল গুজরাট, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্ণাটক, কেরালা এবং কেন্দ্রশাসিত দাদরা ও নগরহাভেলি এবং দমন ও দিউ-এ। অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ড। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দরুণ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ক্ষয়-ক্ষতির যে হিসেব রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পাওয়া গেছে, তাতে কোন জীবনহানি না হলেও প্রায় ৩ লক্ষ বাড়ি / কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১১ হাজার ৭৪০টি গবাদি পশু মারা গেছে। ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৮৯১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর পাশাপাশি ৪ হাজার ৫৫৩টি মাছ ধরার নৌকা এবং ১৮ হাজার ৭০৮টি মাছ ধরার জাল নষ্ট হয়ে গেছে।
বিপর্যয় মোকাবিলার প্রাথমিক দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের। অবশ্য রাজ্য সরকারগুলির প্রয়াসে কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্য করে থাকে। এজন্য রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড় তউকতের দরুণ প্রভাবিত রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। তবে, গোয়া, কেরালা ও ঝাড়খন্ডের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্যের জন্য কেন্দ্রের কাছে কোন দাবি জানানো হয়নি। ওড়িশা সরকারও ত্রান সহায়তার জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে কোন আর্থিক সাহায্য চায়নি। অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় তউকতের দরুণ ক্ষতিগ্রস্ত মহারাষ্ট্র ৯২ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা, কর্ণাটক ১০ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা, পশ্চিমবঙ্গ ৪ হাজার ৫২২ কোটি টাকা, গুজরাট ৯ হাজার ৮৩৬ কোটি ১ লক্ষ টাকা এবং কেন্দ্রশাসিত দমন ও দিউ ৫৬ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছিল।
ঘূর্ণিঝড় তউকতে এবং ইয়াসের প্রভাব কাটিয়ে ওঠার অব্যবহিত পরেই কেন্দ্রীয় সরকার গুজরাটকে ১ হাজার কোটি টাকা, ওড়িশাকে ৫০০ কোটি টাকা, পশ্চিমবঙ্গকে ৩০০ কোটি টাকা এবং ঝাড়খন্ডকে ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আর্থিক সাহায্য দেয়। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে ত্রাণ কার্য পরিচালনার জন্য এই অর্থ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার ২০২১-২২-এ রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে কেন্দ্রীয় অংশ হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল সমস্ত রাজ্যকে ৮ হাজার ৮৭৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দিয়েছে।
ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্বে জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য এবং সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও এজেন্সিগুলির সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চালায়। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ প্রভাবিত এবং প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য নিয়মিত ভিত্তিতে পূর্বাভাস ও সতর্কিকরণ বুলেটিন জারি করে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কার্যকর মোকাবিলার জন্য জাতীয়, রাজ্য ও জেলা স্তরে উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার আগাম সতর্কিকরণ বার্তা জারির প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করেছে, যাতে সর্বাধিক নিখুঁত পূর্বাভাস দেওয়া যায়। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে নকল মহড়া চালানোর পাশাপাশি সামুদায়িক সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির বিপর্যয় মোকাবিলায় গৃহীত ব্যবস্থায় লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হয়েছে। এর ফলে, বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে আগাম প্রস্তুত থাকার পাশাপাশি জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতি অনেকাংশে কম করা সম্ভব হয়েছে। অবশ্য, বিপর্যয় মোকাবিলায় গৃহীত ব্যবস্থাগুলির সংশোধন এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে এই তথ্য দেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী নিত্যানন্দ রাই।
Administrative
Breaking
Current Issue
Environment
India
Lifestyle
News
People
Public Interest
Westbengal
পশ্চিমবঙ্গ