জাতীয় নিয়ামক কর্তৃপক্ষ ডায়রেক্টর কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) শর্তসাপেক্ষে দুটি কোভিড-১৯ টিকা – কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ডের বিপণনে অনুমতি দিয়েছে। সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)-এর সংশ্লিষ্ট বিষয় সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি গত ১৯ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে শর্তসাপেক্ষে নতুন ড্রাগ বা ওষুধের আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহারের বিষয়ে কয়েকটি সুপারিশ করে।

বিশেষজ্ঞ কমিটির এই সুপারিশের প্রেক্ষিতে কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে ডিসিজিআই দুটি কোভিড-১৯ টিকা – কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ডের বিপণন অনুমোদন করেছে। শর্ত আরোপের বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে, ছয় মাস ধরে বা যখনই তথ্য হাতে আসবে তখন যথাযথ বিশ্লেষণ সহ বিদেশে চালু ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলির ডেটা বা তথ্য জমা করা, কোভিডের এই দুটি টিকার ব্যবহার ও সরবরাহ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য কোউইন প্ল্যাটফর্মে লিপিবদ্ধ করা। সেইসঙ্গে, টিকাকরণের পর যে কোনও ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতি এবং ‘স্পেশাল ইন্টারেস্ট’ সম্পর্কিত যে কোনও প্রকার অযাচিত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা। এছাড়াও, টিকা উৎপাদক সংস্থাগুলিকেও ২০১৯-এর এনডিসিটি আইন অনুযায়ী ছয় মাস অথবা যখনই তথ্য হাতে পাওয়া যাবে তার ভিত্তিতে যথাযথ মূল্যায়নের খতিয়ান জমা করতে হবে। ডিসিজিআই-এর পক্ষ থেকে এই দুটি কোভিড-১৯ টিকার বিপণন অনুমতি দেশে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারের তৎপরতা এবং সময়মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টিকেই প্রতিফলিত করে। বিশেষজ্ঞ কমিটির এই অনুমোদন মহামারীর সময় উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবিলায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ করা যেতে পারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং গ্রেট ব্রিটেনের মেডিসিন্স অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি নিজ নিজ দেশে কোভিড টিকার ক্ষেত্রে যথাক্রমে ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দুটি শর্তসাপেক্ষে বিপণনে অনুমতি দিয়েছে।

কোভিড-১৯জনিত বর্তমান বিশ্ব মহামারীর সময় শর্তসাপেক্ষে বিপণনের বিষয়টিতে অনুমতি দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্যই ছিল, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ওষুধ ও টিকার বাজার বিপণন আরও সহজ ও সরল করে তোলা, যাতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ বা টিকার সর্বজনীন প্রয়োগ আরও দ্রুততর হয়।

ভারতে দেশব্যাপী কোভিড-১৯ টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনা হয় গত বছরের ১৬ জানুয়ারি। এখনও পর্যন্ত দেশে ১৬০ কোটির বেশি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশে কোভিড-১৯ টিকাকরণের গতি ও পরিধি সম্প্রসারণে অঙ্গীকারবদ্ধ। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ৩ জানুয়ারি থেকে কোভিড-১৯ টিকাকরণ অভিযানে বয়স-ভিত্তিক আরও একটি শ্রেণীর মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।