ওয়েব ডেস্ক; ৪ ফেব্রুয়ারি : কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন গত ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের সাধারণ বাজেট পেশ করেছেন। বাজেটে বস্ত্র মন্ত্রকের জন্য ৫২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ সালের বাজেট অনুমানের (৪৪১৭.০৩ কোটি) থেকে ১৯ শতাংশ বেশি।

তুলোর, বিশেষত অতিরিক্ত দৈর্ঘ্যসম্পন্ন তুলোর প্রজাতির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাধারণ বাজেটে ৫ বছরের মেয়াদে তুলো মিশন চালু করার কথা বলা হয়েছে। এর আওতায় তুলো চাষীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হবে। ৫টি এফ-এর নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই মিশন কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং উচ্চমানের তুলোর নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ সুনিশ্চিত করবে। দেশীয় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই উদ্যোগ, কাঁচামালের যোগান স্থিতিশীল করার পাশাপাশি আমদানির উপর নির্ভরতা কমাবে এবং বস্ত্র ক্ষেত্রে ভারতকে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিযোগিতার যোগ্য করে তুলবে।

প্রতিযোগিতামূলক দামে অ্যাগ্রো টেক্সটাইল, মেডিকেল টেক্সটাইল এবং জিও টেক্সটাইল-এর মতো কারিগরি বস্ত্রের দেশীয় উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বাজেটে আরও দু’ধরনের শাটল-লেস তাঁতকে করের আওতামুক্ত করা হয়েছে। শাটল-লেস র্যা পিয়ার তাঁত (প্রতি মিনিটে ৬৫০ মিটারের কম) এবং শাটল-লেস এয়ারজেট তাঁতের (প্রতি মিনিটে ১০০০ মিটারের কম) উপর বর্তমান ৭.৫ শতাংশ শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে, উচ্চমানের তাঁত আমদানি করার খরচ কমবে, বস্ত্রবয়ন শিল্পের আধুনিকীকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির পথ সুগম হবে।

বোনা পোশাকের উপর সীমা শুল্কের হার ‘১০ অথবা ২০ শতাংশ’ থেকে বাড়িয়ে ‘২০ শতাংশ অথবা প্রতি কেজি ১১৫ টাকার মধ্যে যেটি বেশি’ করা হয়েছে। এর ফলে, সস্তা পোশাকের আমদানি কমবে এবং ভারতীয় পোশাক উৎপাদকরা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার যোগ্য হয়ে উঠবেন।

হস্ত শিল্পের রপ্তানিকে উৎসাহ দিতে এর সময়সীমা ৬ মাস থেকে বাড়িয়ে ১ বছর করা হয়েছে। প্রয়োজনে এর মেয়াদ আরও ৩ মাস বাড়ানো যাবে। শুল্কমুক্ত উপাদানের তালিকায় উল পালিশের সামগ্রী, ঝিনুক, মুক্তো, শিং সহ ৯টি সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ভারতে বস্ত্র শিল্প ক্ষেত্রের ৮০ শতাংশ সংস্থাই হল অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থা – এমএসএমই ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। বাজেটে রপ্তানির উপর দেওয়া গুরুত্ব, ঋণের সুবিধা ও পরিধির বিস্তার এমএসএমই ক্ষেত্রকে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। এছাড়া, জাতীয় ম্যানুফ্যাকচারিং মিশন, রপ্তানি প্রসার মিশন, ভারত ট্রেড নেটের গঠন, অর্থ যোগানের তহবিল গঠন, শ্রম নিবিড় ক্ষেত্র গড়ে তোলার ব্যবস্থা প্রভৃতি যেসব ঘোষণা বাজেটে করা হয়েছে, তা কর্মসংস্থান এবং উদ্যোগ স্থাপনের সুযোগ সুবিধা বাড়াবে। এমএসএমই-গুলির শ্রেণী বিভাজনের মাপকাঠির পুনর্বিন্যাস এবং গৃহীত অন্যান্য ব্যবস্থা বস্ত্র শিল্পের জন্য এক সহায়ক পরিমণ্ডল গড়ে তুলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *