পঞ্চায়েত ব্যবস্থা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই, পরিকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা সংশ্লিষ্ট রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রাথমিক দায়িত্ব। অবশ্য, পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানগুলির পর্যাপ্ত পরিকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা প্রদানে একাধিক কর্মসূচি রূপায়িত হয়েছে। রাজ্যসভায় এক লিখিত জবাবে একথা জানিয়ে পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল আরও বলেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন ২০২০-২১ অর্থবর্ষে গ্রামাঞ্চলীয় স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থাগুলির জন্য ৬০ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব করে। এছাড়াও, ২০২১-২৬ পর্যন্ত পাঁচ বছরে ২৮টি রাজ্যকে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার সবস্তরের উন্নয়নে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অর্থ কমিশনের এই অনুদান পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক খরচ বাদে ব্যবহার করা যায়। অনুদানের অর্থ মৌলিক পরিষেবা গড়ে তোলা, প্রকাশ্য স্থানে মল-মূত্র বর্জন ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, পানীয় জল সরবরাহ, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, জল শোধন প্রভৃতি কাজে খরচ করা যায়।
পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বরাজ অভিযান কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। ২০১৮-১৯ থেকে এই কর্মসূচি খাতে গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন গড়ে তোলা, পঞ্চায়েতের কাজের জন্য কম্প্যুটার ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী সংগ্রহ করতে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এছাড়াও, টেলিযোগাযোগ দপ্তর সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতকে নেট ব্যবস্থার সঙ্গে জুড়তে পর্যায়ক্রমে ভারতনেট কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। এই কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৫০ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্রডব্যান্ড সংযোগ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতের যাবতীয় কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক ই-পঞ্চায়েত মিশন মোড কর্মসূচি রূপায়ণ করে আসছে। এই কর্মসূচির ফলে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন পরিকল্পনা, বাজেট প্রণয়ন, হিসেব-নিকেশ, নজরদারি, সামাজিক অডিট ও বিভিন্ন ধরনের নাগরিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।


পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী এক পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বরাজ অভিযানের আওতায় অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গকেও পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানগুলির মানোন্নয়নে ২০২১-২২ এ ১৫ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। একইভাবে, রাজ্যের গ্রামাঞ্চলীয় স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থাগুলিকে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ২০২১-২২ এ ৩ হাজার ২৬১ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান। উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্যগুলিকে মোট অনুদানের ৯৯.৮৫ শতাংশ অর্থই দেওয়া হয়েছে।