ওয়েব ডেস্ক; সৌম্যদীপ বেরা: মোনালিসা একটি বিশ্বখ্যাত চিত্রকর্ম। ইতালীর শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ১৬ শতকে এই ছবিটি অঙ্কন করেন।

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ১৫০৩ থেকে ১৫০৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে একটি পাইন কাঠের টুকরোর ওপর মোনা লিসার এই ছবিটি আঁকেন।

চিত্রকলার ইতিহাসে এই চিত্রকর্মটির মতো আর কোনোটি এত আলোচিত ও বিখ্যাত হয়নি।
এর একমাত্র কারণ মোনালিসার সেই কৌতূহলোদ্দীপক হাসি, যা পরবর্তীতে বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ধারণা করা হয়, বিখ্যাত এই ছবিটি মোনা লিসার দ্বিতীয় পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ স্মরণে অঙ্কিত হয়। অনেক শিল্প-গবেষক রহস্যময় হাসির এই নারীকে ফ্লোরেন্টাইনের বণিক ফ্রান্সিসকো দ্য গিওকন্ডোর স্ত্রী লিসা গেরাদিনি বলে সনাক্ত করেছেন। এটি ছিল শিল্পীর সবচেয়ে প্রিয় ছবি এবং তিনি সবসময় এটিকে সঙ্গেই রাখতেন। আর তিনি নিজেই বলতেন এটি হলো আমার সেরা শিল্পকর্ম। ২০০৫ সালে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়েছে, এই চিত্রকর্মটিতে আঁকা নারী প্রকৃতপক্ষে ইতালির ফ্লোরেন্সের অভিজাত নারী ও ফ্রান্সেসকো দেল জোকোন্দোর স্ত্রী লিসা দেল জোকোন্দো গেরার্দিনি। তবে মোনা লিসাকে নিয়ে অনেক ধারণা প্রচলিত ছিল। কিছু গবেষকগণ মনে করতেন, মোনা লিসা হলো লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মা আবার কেউ মনে করতেন মোনা লিসা হলো লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বান্ধবী। একটি কম্পিউটার পরীক্ষায় দেখা গেছে মোনা লিসা’র সাথে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির কিছুটা মিল রয়েছে। তাই মনে করা হয় হয়তো মোনা লিসা চিত্র কর্মটি না ছেলে না মেয়ে। লিওনার্দোর মোনা লিসা সম্পর্কে সমসাময়িক নিষ্পত্তিমূলক তথ্যের অভাবের কারণে চিত্রকর্মটিতে অঙ্কিত নারীর পরিচয় নিশ্চিত করা কঠিন ছিল। ২০০৫ সালে সিসারোর এপিস্তউলেই আদ ফামিলিয়ারেস (লাতিন: Epistulae ad Familiares, আত্মীয়দের চিঠি) বইটির ১৪৭৭ সালের সংস্করণের ডান মার্জিনে ভেসপুচ্চির লেখা একটি মন্তব্য হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার থেকে আবিষ্কারের পর এই অবস্থার পরিবর্তন হয়। ড. আরমিন শ্লেচার লাইব্রেরিতে একটি ইনকুনাবুলা (মুদ্রণশিল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে মুদ্রিত বই) প্রদর্শনীর জন্য বইয়ের তালিকা প্রস্তুত করার সময় এই আবিষ্কার করেছিলেন।
শিল্পকর্মটি ফ্রান্সের ল্যুভ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ল্যুভ জাদুঘরের তথ্যমতে প্রায় ৮০% পর্যটক শুধু মোনালিসার চিত্রটি দেখার জন্য আসে।