ইমদাদুল হক
ফেলে যাওয়া রুমালখানি পর্ব ১৭
১৭ তম পর্বের পর……..
মৌর দিকে তাকালো জরি। মৌ, সত্যি আমি তখন পাগল, আমার সত্যি তখন মাথা খারাপ। সেই মানুষ ছাড়া কারও কথা আমি ভাবতে পারি না। এই অবস্থায় জোর করে আমাকে বিয়ে দেওয়া হলো। বুকে তাঁর ফেলে যাওয়া রুমালখানি, পালকিতে করে আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো শ্বশুরবারি। বাসররাত। বর ঢুকলো ঘরে। বললাম শরীর খারাপ। মেয়েলি ব্যাপার। সামনে আসবেন না। লোকটা মন খারাপ করে ঘুমিয়ে পড়ল। আর সেই ফাঁকে আমি দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম। ঘুটঘুটে অন্ধকার রাত, দু আড়াই মাইল পথ, মাঠ জঙ্গল ভেঙে ভোরবেলা বাড়িতে। সেই আসাই
আসা। শ্বশুরবাড়ি থেকে চেষ্টা করলো ফিরিয়ে নিতে, মা বাবা ভাই বোনরা চেষ্টা করলো, নানা রকমভাবে বোঝালো, আমার কথা একটাই কথা, আমি যাবো না। এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে গলায় দড়ি দেবো।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল জরি। দিনে দিনে দিল গেল। বাপ মরলো, মা মরলো। ভাই বোনরা যে যার সংসারে। আমার জীবন হয়ে উঠল আজকের এই জীবন। এখনও সেই মানুষ আমার মনে, সেই বিকেলের ছবি আমার চোখে, তাঁর ফেলে যাওয়া রুমালখানি আমার বুকে। সেই রুমালের স্পর্শে মনে হয় তাঁকে আমি বুকে জড়িয়ে রেখেছি। অথবা তিনি একটুখানি ছুঁয়ে আছেন আমাকে।
ক্রমশ……..